এফিলিয়েট মার্কেটিং এবং ব্লগিং কোনটা থেকে অনলাইনে বেশি আয় করা যায়
এফিলিয়েট মার্কেটিং এবং ব্লগিং থেকে অনলাইনে আয় করার বিষয়টি সম্পর্কে অনেকেই অবগত। আজকে এফিলিয়েট মার্কেটিং করে খুব সহজে অনলাইনে আয় করার কিছু বেসিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করব। তাছাড়া এফিলিয়েট মার্কেটিং এর আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করব যেমনঃ
- এফিলিয়েট মার্কেটিং কি
- এফিলিয়েট মার্কেটিং এবং ব্লগিং এর মধ্যে পার্থক্য কি
- এফিলিয়েট মার্কেটিং নাকি ব্লগিং কোনটা বেশি লাভজনক
- এফিলিয়েট মার্কেটিং ক্যারিয়ার শুরু করার জন্য কোন কোন মার্কেটপ্লেসগুলোর সবচেয়ে বেশি বেস্ট
এফিলিয়েট মার্কেটিং কি
বর্তমানে আমাদের মধ্যে অনেকেই আছে যারা অনলাইনে প্রোডাক্ট ক্রয় করতে পছন্দ করে। ক্রেতাদের চাহিদার উপর ভিত্তি করে বর্তমানে অনেকগুলো সাইট রয়েছে, সেগুলো থেকে ভালো মানের প্রোডাক্ট কিনতে পারেন।
তার মধ্যে কিছু কিছু কোম্পানি আছে তাদের প্রোডাক্ট গুলো বেশি বেশি বিক্রি করার জন্য তাদের সাইটে এফিলিয়েট পার্টনার অপশনটি চালু রাখে। যারা এফিলিয়েট মার্কেটিং করে।
এফিলিয়েট মার্কেটিং যারা করে তারা ওই ওয়েবসাইটগুলোতে এফিলিয়েট পার্টনারের জয়েন করে থাকে,
এখন কথা হল এফিলিয়েট মার্কেটিং করে কিভাবে অনলাইনে আয় করে একজন ব্যক্তি যখন একটি এর অধিক কোম্পানির এফিলিয়েট পার্টনার জয়েন করে, সেই কোম্পানির বা কোম্পানিগুলোর প্রোডাক্ট বা সার্ভিস আপনি প্রমোট করে সেল করার মাধ্যমে এফিলিয়েট আর্নিং করতে পারেন। মানে আপনার মাধ্যমে কম্পানির প্রোডাক্ট বা সার্ভিস সেল হলে, প্রত্যেকটি সেল থেকে আপনি নির্দিষ্ট একটি কমিশন পাবেন এবং এটাকে এফিলিয়েট সেল এবং এফিলিয়েট সেল করা কমিশনকে এফিলিয়েট আর্নিং বলে।
অনলাইনেে আয় করার সহজ মাধ্যম গুলোো জানতে এখানে ক্লিক করুন
এফিলিয়েট মার্কেটিং এর সবচেয়ে বড় সুবিধা হল আপনার প্রোডাক্ট তৈরি করতে হবে না বা আপনার কাছে কোন প্রোডাক্ট নেই, কিন্তু অন্যান্য কোম্পানির কাছে প্রচুর পরিমাণে প্রোডাক্ট আছে, সে প্রোডাক্টগুলো মার্কেটে অনেক ডিমান্ড আছে, কোয়ালিটি প্রডাক্ট সবাই বিশ্বাস করে, সেই সমস্ত প্রডাক্টগুলো আপনি অনলাইনে আপনার কাস্টমার বা অডিয়েন্স দের কাছে বিক্রি করে দিবেন এবং প্রতি সেলে আপনি কমিশন পাবেন। এটাই মূলত এফিলিয়েট মার্কেটিং
এফিলিয়েট এবং ব্লগিং এর মধ্যে পার্থক্য
ব্লগিং
আমরা অনেকেই ব্লগিং কি? অনেকেই জানি আবার অনেকে জানে না। যারা জানেন না তাদের জন্য বিষয়টি এখন ক্লিয়ার করে দেব। ব্লগিং হচ্ছে আপনার একটি ব্লগ সাইট, মানে ব্লগ ওয়েবসাইট যেখানে আপনি একটি ওয়েবসাইট তৈরি করবেন এবং বিভিন্ন বিষয়ে লেখালেখি করবেন। যারা ব্লগিং করে তাদেরকে ব্লগার বলা হয়।
আপনি হয়তো বা কোন বিষয়ে জানতে চাইলে প্রথমে গুগল মামার সাহায্য নেন, এখন আপনাকে বিভিন্ন সাইট সাজেস্ট করে তখন আপনি একটি সাইটের ভিতরে প্রবেশ করে আর্টিকেল (লিখাটি) পড়ে আপনার সমস্যাটি সম্পর্কে জানতে পারেন এবং আমার এই সাইটটিতে এখন যে লিখাটি পড়ছেন এটি একটি ব্লগ সাইট।
এখানে হয়তোবা অনেকে আছে যারা ব্লগিং করে বা ওয়েবসাইট তৈরি করে ইনকাম করতে চান। তাদের মধ্যে অনেকের মনে প্রশ্ন হচ্ছে- কোন বিষয়ের উপর কনটেন্ট লিখলে বেশি ইনকাম করা যাবে।
সত্যি কথা বলতে বাস্তবতার দিকে তাকালে আপনি যদি খেয়াল করেন, তবে দেখতে পারবেন বিভিন্ন মানুষ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ব্লগিং করছে। আপনি আপনার একটি ব্লগ সাইট তৈরি করে আপনার যে বিষয়গুলো ভালো লাগে বা যে বিষয়গুলোর উপর এক্সপার্ট যেমন হেলথ, বিউটি টিপস, টেকনোলজি বিষয় যেটা আপনার কাছে কম্ফোর্টেবল মনে হয়ে থাকে সেই বিষয় নিয়ে লিখতে পারেন। যদি আপনার লক্ষ্য থাকে আপনি এফিলিয়েট মার্কেটিং করবেন তাহলে সবচেয়ে ভালো হয় একটি ইংলিশ ব্লগ সাইট খুলে বিভিন্ন প্রোডাক্ট রিভিউ কনটেন্ট নিয়ে লিখা লিখি করে ব্লগিং শুরু ব্লগে করতে পারেন।
ব্লগিং VS এফিলিয়েট মার্কেটিং
ব্লগিং জিনিসটা কি সেটা জানলাম। এখন এফিলিয়েট মার্কেটিং হল ব্লগিং-এর শুধুমাত্র একটি অংশ। ব্লগিং হচ্ছে একটি সম্পূর্ণ সলিউশন। আপনি আপনার সাইটে বিভিন্ন বিষয়ে লেখালেখির মাধ্যমে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করতে পারেন।
আপনার যদি একটি ওয়েবসাইট থাকে তাহলে আপনি নরমালি গুগল এডসেন্স থেকে ইনকাম করতে পারবেন। এবং আপনার ইনকাম আরো বেশি বৃদ্ধি করার জন্য আপনার ওয়েবসাইটের মাধ্যমে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করতে পারেন।
ব্লগ সাইট থেকে ইনকাম করার জন্য বিভিন্ন কোম্পানির একটি স্পনসর্শিপ, তাছাড়া আপনার সাইটটি সেল করার মাধ্যমে ইনকাম করতে পারেন। অর্থাৎ ব্লগিং একটি মাল্টিপল রেভিনিউ সোর্স আর সেই মাল্টিপল রেভেনিউ সোর্স গুলোর মধ্যে এফিলিয়েট মার্কেটিং হচ্ছে একটি।
ব্লগিং এবং অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর পার্থক্য বোঝানোর জন্য উদাহরণস্বরূপ, আপনি একটি টেকনোলজি রিলেটেড ব্লগ সাইট তৈরি করেছেন এবং সেখানে আপনি প্রতিনিয়ত বিভিন্ন গ্যাজেট রিভিউ করেন। আপনি জাস্ট শখের বশে তৈরি করেছেন। আপনি কিন্তু চাইলে এখান থেকে ইনকাম করতে পারবেন।
কিভাবে প্রথমে আসি- এফিলিয়েট মার্কেটিং করে যেমন, আপনার ওয়েবসাইটে অনেকগুলো পোস্ট আছে। দরুন তার মধ্যে একটি পোস্ট ডিজিটাল ক্যামেরা নিয়ে। আপনি ডিজিটাল ক্যামেরা টির বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করলেন। এতে হয়তোবা আপনার কোন লাভ হল না আপনি কি করলেন, Amazon affliate পার্টনারের জয়েন হয়ে সেখান থেকে আপনার ডিজিটাল ক্যামেরার এফিলিয়েট লিংক টি আপনার ব্লগ সাইটে দিয়ে দিলেন। যখন কোন ভিজিটর আপনার ডিজিটাল ক্যামেরার পোস্টটি পড়ে লিঙ্কটিতে ক্লিক করে ক্যামেরা কিনবে যার কারণে আমাজন কম্পানি আপনাকে কমিশন দিবে।
আপনি কিন্তু ব্লগিং করার মাধ্যমে মানে, আপনার ওয়েবসাইটের লিংক দেওয়ার কারনে এবং বিক্রি হওয়ার কারণে আমাজন থেকে কমিশন পাবেন। মানে এফিলিয়েট মার্কেটিং করার জন্য ব্লগিং হলো একটি মাধ্যম। মানে ব্লগিং এবং অ্যাফিলিয়েট দুটো আলাদা বিষয়। এফিলিয়েট মার্কেটিং করে সন্তুষ্ট না হলে আপনি কিন্তু চাইলে আপনার ওয়েবসাইটে গুগল এডসেন্সের এড লাগিয়ে গুগল এডসেন্স থেকে ইনকাম করতে পারবেন, যেটা অনেকেই করে থাকে।
এখন যারা নতুন ব্লগিং শুরু করতে চাইছে তাদের মধ্যে অনেকে একটি কমন প্রশ্ন হল, ব্লগস্পট আর্টিকেল কত ওয়ার্ডের লিখতে হবে এবং কয়টি পোস্ট লিখতে হবে?
একটা সময় ছিল 200 থেকে 500 ওয়ার্ড লিখলেই হতো। এখন গুগোল এ কম্পিটিশন বেড়ে গেছে যার কারণে সর্বনিম্ন 1000 ওয়াট লেখা এবং পোস্টটি গুগলের প্রথম পেজে নিয়ে আসার জন্য এসইও করতে হবে। (seo কেন করবেন)
অপরদিকে আপনি যতদিন ব্লগিং করবেন, ততদিন আপনাকে আপনার সাইটে পোস্ট লিখে যেতে হবে। মানে কতটি পোস্ট করবেন সেটার কোন লিমিট নেই। আপনার ব্লগে প্রচুর পরিমাণে পোস্ট থাকলে এবং সঠিকভাবে এসইও করতে পারলে আপনার সাইটে প্রচুর পরিমাণে ভিজিটর আসবে। যার কারনে আপনার ভিজিটর প্রোডাক্ট না কিনলে কিংবা গুগলের অ্যাড এ ক্লিক না করলেও শুধুমাত্র আপনার সাইটটি ভিজিট করার কারনে আপনি এডসেন্স থেকে ইনকাম করতে পারবেন। তাই আপনি শুধুমাত্র এফিলিয়েট মার্কেটিং এর উপর জোর দিবেন না, মাল্টিপল রেসোর্স ডেভলপ করার জন্য আপনাকে ব্লগিংয়ের মনোযোগী হতে হবে। যার কারনে আপনার ইনকাম দ্বিগুণ হবে। সবচেয়ে এফিলিয়েট মার্কেটিং এবং ব্লগিং এর মধ্যে একটি বড় ধরনের পার্থক্য আছে।
এফিলিয়েট মার্কেটিং হচ্ছে ব্লগিং এর একটি অংশ। কোন কোম্পানির প্রোডাক্ট সেল করে দিবেন যার বিনিময়ে আপনি কমিশন পাবেন,
আর ব্লগিং হচ্ছে আপনার একটি ওয়েবসাইট থাকবে। সেখানে বিভিন্ন কনটেন্ট এর উপর লেখালেখি করবেন। এবং কনটেন্ট রাইটিং এর উপর বিভিন্ন উপায়ে অনলাইনে ইনকাম করবেন।
এফিলিয়েট মার্কেটিং শুরু করার জন্য কোন মার্কেটপ্লেসগুলোতে বেস্ট হবে
এফিলিয়েট মার্কেটিং করে অনলাইনে আয় করা যেমন সহজ তেমনি কঠিন। ক্রেতাদের চাহিদার উপর ভিত্তি করে নতুন নতুন ওয়েবসাইট তৈরি হচ্ছে। বিশ্বের লক্ষ লক্ষ ওয়েবসাইট রয়েছে যারা এফিলিয়েট পার্টনারশিপ নিয়ে থাকে। এখানে সবগুলো মার্কেটপ্লেস বেস্ট নয়। ক্যারিয়ার গড়ার জন্য কিছু বেস্ট এফিলিয়েট মার্কেটিং হলঃ
Amazon & aliexpress এই দুইটি হচ্ছে সেইম টাইপের কম্পানি। দুটি অনলাইন ভিত্তিক শপিং মল। এখানে মানুষের নিত্য প্রয়োজনীয় প্রায় সমস্ত প্রোডাক্ট পাওয়া যায় এবং পুরো পৃথিবী থেকে লক্ষ কোটি মানুষই মার্কেটপ্লেসগুলোর থেকে প্রতিনিয়ত শপিং করে। পাশাপাশি থিমফরেস্ট themeforest হচ্ছে একটি সফটওয়্যার এবং ডিজিটাল প্রোডাক্ট মার্কেটিং।
এখানে শুধুমাত্র সফটওয়্যার ব্লগ বা ওয়েবসাইট এর থিম আরো ডিজিটাল অনেক কিছু বিক্রি হয়, আপনি এই মার্কেটপ্লেসগুলোর থেকে নিশ্চিন্তে জয়েন করে আপনার এফিলিয়েট মার্কেটিং এবং ব্লগিং ক্যারিয়ার শুরু করতে পারেন এবং আপনার ওয়েবসাইটের মাধ্যমে এই মার্কেটগুলোর প্রোডাক্ট বা সার্ভিস সেল করার মাধ্যমে আপনি ভালো মানের এফিলিয়েট সেল জেনারেট করতে পারবেন। পাশাপাশি গুগল এডসেন্স তো আছেই।
আজকে আর লিখব না পরবর্তীতে আরো এফিলিয়েট মার্কেটিং এর বিষয়ের উপর বিস্তারিত আরও লিখব সবাইকে ধন্যবাদ।